add site 2

২৫টি ভুয়া বিয়ে, অবশেষে পুলিশের ফাঁদে ধরা ‘লুটেরি দুলহান’

 

২৫টি ভুয়া বিয়ে, অবশেষে পুলিশের ফাঁদে ধরা ‘লুটেরি দুলহান’




অভিনব কৌশলে ২৫ জন পুরুষকে বিয়ে করে লক্ষাধিক টাকার গয়না ও নগদ অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিনি। প্রতিবারই নতুন নাম, নতুন শহর আর নতুন পরিচয়ে হাজির হয়ে ভুয়া বিয়ের নাটক সাজান। তবে এবার নিজেরই ফাঁদে পড়েছেন ‘লুটেরি দুলহান’ অনুরাধা পাসওয়ান। পুলিশের সাজানো ভুয়া বিয়েতে অংশ নিতে গিয়ে অবশেষে ধরা পড়েছেন তিনি।

৩২ বছর বয়সী অনুরাধা পাসওয়ান ‘সাদামাটা গরিব কনের’ ছদ্মবেশে পুরুষদের ফাঁদে ফেলতেন। নিজের এক বেকার ভাইয়ের গল্প তুলে ধরতেন। মানুষের সহানুভূতি কুড়াতে নিজেকে অসহায় হিসেবে তুলে ধরতেন। আর তার সঙ্গে থাকত একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র।
পুলিশ জানিয়েছে, মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা অনুরাধা একটি ‘বিয়ে প্রতারণা চক্রের’ নেতৃত্বে ছিলেন। তার সহযোগীরা সম্ভাব্য পাত্রদের কাছে ছবি ও প্রোফাইল পাঠাতেন, চমৎকার জীবনসঙ্গী পাওয়ার আশ্বাস দিতেন। মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতেন আরেক চক্রসদস্য, যিনি প্রতিটি বিয়ের জন্য প্রায় ২ লাখ রুপি করে নিতেন।

 
বিয়ে সম্পন্ন হতো বাড়িতে বা মন্দিরে হিন্দু রীতিনীতি অনুযায়ী। এরপর শুরু হতো প্রতারণার মূল নাটক। শ্বশুরবাড়ির সবাইকে আপন করে নিতে নানা চেষ্টায় লিপ্ত হতেন অনুরাধা। আত্মবিশ্বাস তৈরি হলেই, একদিন রান্নায় ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সবাইকে অচেতন করে নিয়ে পালিয়ে যেতেন গয়না, টাকা ও দামি জিনিসপত্র।

২৫ জন প্রতারিত বরদের একজন, রাজস্থানের সাওয়াই মাধোপুরের বাসিন্দা বিষ্ণু শর্মা। গত ২০ এপ্রিল তিনি অনুরাধাকে বিয়ে করেন মধ্যস্থতাকারী পাপ্পু মীনার মাধ্যমে। পাপ্পুকে দেন ২ লাখ রুপি। বিয়ের দুই সপ্তাহের মধ্যে অনুরাধা পালিয়ে যান ১ লাখ ২৫ হাজার রুপির গয়না, ৩০ হাজার নগদ টাকা ও ৩০ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন নিয়ে।

 
বিষ্ণু শর্মা বলেন, আমি ঠেলাগাড়ি চালাই, বিয়ের জন্য ঋণ নিতে হয়েছিল। এমনকি মোবাইলটাও ধার করে এনেছিলাম, সেটাও নিয়ে গেছে। ভাবতেই পারিনি এমন প্রতারণার শিকার হব।

তিনি আরও বলেন, সেদিন রাতে কাজ থেকে ফিরে খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ি। সাধারণত আমি খুব বেশি ঘুমাই না, কিন্তু সেদিন যেন অচেতন হয়ে পড়েছিলাম। এখন মনে হচ্ছে খাবারে কিছু মেশানো ছিল।

শর্মার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে সাওয়াই মাধোপুর পুলিশ। একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এক কনস্টেবলকে সাজানো হয় সম্ভাব্য বর হিসেবে। চক্রের দালালদের মাধ্যমে তার সঙ্গে পরিচয় করানো হয় পাত্রী অনুরাধা পাসওয়ানের।

পুলিশ জানায়, অনুসন্ধানে দেখা যায় বিয়ের সব কাগজপত্র জাল। কনস্টেবল ‘বর’ সেজে অনুরাধার সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখেন এবং অবশেষে তাকে বিয়ের জন্য রাজি করান। বিয়ের স্থান ঠিক হয়, কিন্তু সেখানেই অপেক্ষা করছিল পুলিশ। পরে অনুরাধাকে গ্রেফতার করা হয় মধ্যপ্রদেশের ভোপাল থেকে।

পুলিশ বলছে, অনুরাধার বিরুদ্ধে প্রতারণা, জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের একাধিক মামলা প্রক্রিয়াধীন। বাকি ভুক্তভোগীদের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি
 
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url

add site 4